Thursday, December 04, 2014

আজি গুরুগৃহবাস সমাপ্ত আমার

ছেড়ে চলে যেতে হবে, কিমাকার এই মাংসল পৃথিবী, আজি গুরুগৃহবাস সমাপ্ত আমার। পৃথিবীর পরিখা বরাবর হাঁটছে দুই আচ্ছন্ন পাফরমার, যেন ঘড়ির দুটি কাঁটার ইশারা, তারা এদিক ওদিক ছুটে যায়, উদবাস্তু জ্যামিতি যেমন হয়, আর দিঘীভরা জল করে টলমল। জলঘড়ি। উদ্ভ্রান্ত সেই আদিম যুগের শুরু যেখানে, কেন মুখপানে চেয়ে আছ গো মা, নীলগাইটি এসে দাড়ায়, যে কদাচ নীল ছিল না। আকাশ ছিল, জল ছিল, অবকাশও ছিল বিস্তর হাঁটাহাঁটির মাঝে, সন্ধ্যে সাড়ে সাতটায় আমাদের ঘড়ির কাঁটারা নিজে নিজে ঘুরত, নন্দন দুই নিচে জলতল ক্রমশ উঠত, মোবাইল বাজত, চাই মিং-লিয়াং ছবি তুলতেন উদবাস্তু আত্মার পরিমিতি।

তুমি এইভাবে ফিরে ফিরে আসো। গল্পেরা কিমা হয়। বরফের ঘরে আমাদের অভিমান ঝরা রক্তের মত শান্ত উদ্দিপনা নিয়ে ফিরে আসে। ডুমুর বৃক্ষের তলে উপাসনারত শমিক শেষ পেগটি নিশ্চিহ্ন হলে বাইকের পছনে উঠে বসে লি কং শেং এর মত, তখনই মেঘ ডাকে চাই মিং-লিয়াং পেটের পৃথিবীতে, সূর্য দেব অস্তমিত, হায় অভিনয় করে ওঠা সাংবাদিকটি চলে যায় রাত্রির গভীরে। সম্বল তিরিশটি কলের একটি লিস্ট। মেঘা চোখের কোণে হেসে ওঠে,ভারি অদ্ভূত তার পুজোর থালার পাশে দুটি গ্লাস, ৩০-৬০ বিভাজনে ন্যস্ত। মাছেদের পৃথিবী আজ চৌকো হয়ে গেছে। নির্বাক ধুপগুলি পুড়তেই থাকে সময়ের অস্থির আয়নায়, যদুঘরের বড়ঘড়িটির কাঁটা ঘোরাচ্ছেন লি কাং শেং আরও দুটি লাঠি বেঁধেছেন, কাঁটাদুটির মত। কাঁটাদিয়ে কাঁটা তোলার কথা আমার মনে পড়ে। জাফ্রি কাটা সবুজ পিঠের উপরে মুখটি ঘুরিয়ে এনে শ্রীময়ী বলে, আজ তাড়াতাড়ি যাই, আজ বয়ফ্রেন্ডের মায়ের জন্মদিন।

আমরা পাশাপাশি লালন করেছি এ যাবত সমস্ত হাঁটাহাঁটি। ঘড়ির দুটি কাঁটার মত। তারা কখনও ইস্টে গেছে কখনও ওয়েস্টে, আপামর মুরগির নীচে, যেভাবে দৌড়াদৌড়ি করি রাত্রি নেমে এলে। সখ- আহ্লাদ, বাসনা ও প্রেমটির মত সমস্ত বাইনারি আজ কুঁকড়ে যাচ্ছে। লিফটের উপরে চড়ে বসে আছি, আগে পৌঁছাব বলে, সে গাড়ি সময়ের তাই সে চলে না। উপত্যাকা। মগ্ন তুষার পড়ে ধিরে ধিরে। দুঃসংবাদ আমাকে ভারি করে তুলছে প্রত্যহ ও টেলিভিশন। ক্ষিদের মত লম্বা হচ্ছে আমাদের আশা। সখের পোশাক বহনের জন্য দুঃশাসনরাও আজ নেই হস্তিনাপুরে, আমেরিকার কোন এক প্রদেশে কর্মব্যস্ত আমাদের পুতুলখেলার সঙ্গী-সাথীরা। দীর্ঘ শব যাত্রার একদা সঙ্গী ছিল যারা। পড়ে থাকল টানেল ভিশন। আর এই শহরে শিরা-উপশিরা জুড়ে নোংরা জলে ডুবে যাচ্ছে আমাদের ঘড়িগুলি। নিজের মুখের দিকে তাকাতে পারি না কেননা জানালায় কোনও আলো জেগে নেই। আর হতবাক আয়নারা অস্থির। বড় পদ্মঘড়িটিতে শ্যাওলার মত ভাসছে বিন্দু বিন্দু ওয়াটার মেলন। কাঁটাগুলি এঁকে-বেঁকে তার দুটি শিং হয়ে গেছে আজ।